
ঘরোয়া কিছু উপাদান ব্যবহার করে সহজেই দাদ নিরাময় করা যায়। আসুন জেনে নেওয়া যাক রিংওয়ার্ম বা দাদের সমস্যার ঘরোয়া প্রতিকারগুলো সম্পর্কে।
রিংওয়ার্ম বা দাদ খুবই সাধারণ
এবং অতি পরিচিত একটি ফাংগাল ইনফেকশন বা সংক্রমণ। শরীরের বিভিন্ন স্থানে যেমন, হাত,
পা, পিঠ, পায়ের আঙ্গুল, হাতের আঙ্গুল এবং মাথার তালুতেও দাদ হতে দেখা যায়। এটি খুবই
সংক্রামক এবং খুব সহজেই একজন থেকে অন্য জনের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। দাদ হলে ত্বকের উপর গোলাকার
দাগ সৃষ্টি হয়, চুলকানি হয় এবং আঁশের মতো উঠতে থাকে। এই লাল গোলাকার রিং এর মতো চেহারার
জন্যই এই ছত্রাক সংক্রমণের নাম রিংওয়ার্ম। এই সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন প্রকার
চিকিৎসা আছে। চিকিৎসকরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অ্যান্টিফাংগাল ক্রিম ব্যবহারের পরামর্শ
দিয়ে থাকেন। কিন্তু এটি অনেক সময়ই তেমন কার্যকরী হয় না। তবে ঘরোয়া কিছু উপাদান ব্যবহার
করে সহজেই দাদ নিরাময় করা যায়। আসুন জেনে নেওয়া যাক রিংওয়ার্ম বা দাদের সমস্যার ঘরোয়া
প্রতিকারগুলো সম্পর্কে।
১)
মধু: মধু
ছত্রাকের বৃদ্ধিকে প্রতিহত করতে সহায়তা করে। কারণ, মধুতে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ও ছত্রাক-নাশক
উপাদান আছে। পরিষ্কার তুলায় মধু লাগিয়ে আক্রান্ত জায়গায় লাগিয়ে রাখুন যাতে সম্পূর্ণ
দাদের স্থানটি ঢাকা পরে। দাদ দূর হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন এটি ব্যবহার করতে করুন।
২) হলুদ: অ্যালোভেরা:
ছত্রাকের সংক্রমণ ঠেকাতে অ্যালোভেরা খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। অ্যালোভেরাতে রেজিন
থাকে বলে তা দাদের চুলকানি, যন্ত্রণা ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। রেজিন দাদের চুলকানি,
যন্ত্রণা ও অন্যান্য উপসর্গ দ্রুত কমাতে পারে। অ্যালোভেরার পাতা থেকে জেল বের করে নিয়ে
আক্রান্ত স্থানে সরাসরি লাগান। দাদ দূর হওয়া পর্যন্ত দিনে কয়েকবার অ্যালোভেরা জেল লাগান।
উপকার পাবেন।
৩) রসুন: রসুনে স্বাস্থ্যের
জন্য উপকারি সব উপাদান রয়েছে। দাদের সমস্যা দূর করতেও রসুন খুবই কার্যকরী। রসুনের ছত্রাকরোধী
উপাদান অ্যাজোইন বিভিন্ন প্রকার ছত্রাকের ইনফেকশন দূর করতে পারে। ১-২ কোয়া রসুন ভাল
করে থেঁতলে নিন। এর সঙ্গে ৩ টেবিলচামচ মধু ও ৩ টেবিলচামচ অলিভ অয়েল মিশান। এই মিশ্রণটি
ত্বকের দাদে আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে ১ ঘন্টা রেখে দিন। তার পর উষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
অন্তত ২ সপ্তাহ দিনে ২-৩ বার মিশ্রণটি ব্যবহার করুন। উপকার পাবেন।
৪) তুলসি: তুলসি পাতায়
অ্যান্টিইনফ্লামেটরি ও অ্যান্টিফাংগাল উপাদান থাকে যা দাদের সংক্রমণ ছড়িয়ে যাওয়া প্রতিহত
করে। এ ছাড়াও দাদের উপসর্গ দূর করতেও সাহায্য করে। তুলসি পাতা চুলকানি ও র্যাশ দূর
করে। এ জন্য তুলসি পাতার রস করে আক্রান্ত স্থানে লাগাতে হবে।
৫) কাঁচা হলুদ: কাঁচা
হলুদের রস আক্রান্ত স্থানে লাগালে রিংওয়ার্ম বা দাদের সমস্যা দ্রুত সেরে ওঠে। হলুদের
শক্তিশালী অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টিফাংগাল উপাদান রিংওয়ার্ম বা দাদের সংক্রমণ ছড়িয়ে
যাওয়া প্রতিরোধ করে।
৬) জায়ফল: জায়ফল গুঁড়া
করে জলের সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট দাদের জায়গায় লাগান। এতে দ্রুত সেরে
যাবে। জায়ফলের অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টিইনফ্লামেটরি উপাদান দাদ নিরাময়ে খুবই কার্যকর।