মুখে মাস্ক পরে সাত পাকে বাঁধা পড়লেন যুবক ও যুবতী। লক ডাউন, তাই সানাই বাজল না। রজনীগন্ধায় খোঁপা বেঁধে ভিড় করলেন না আত্মীয় পরিজনরাও। নেই সমবেত প্রীতিভোজও। লগ্ন মেনে বিয়ে হল কালী মন্দিরে। বিয়ে বলে কথা তাই ছিলেন হাতে গোনা কয়েকজন বরযাত্রী। তাঁদের হাত ধোওয়ানো হল স্যানিটাইজারে। মুখ বাঁধা হল মাস্কে। বসানো হল সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। আসানসোলের সালানপুরে লক ডাউনের মাঝে এভাবেই হল মালাবদল। এমন বিয়ে আজীবন মনে রাখবেন উপস্থিত বাসিন্দারা।
সালানপুরের উত্তররামপুর জিৎপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কল্যা গ্রামের ডাঙ্গালপাড়ার বাসিন্দা জগন্নাথ মির্ধার সঙ্গে ওই গ্রামেরই বাসিন্দা টুলু দাসের কন্যা মিনুর শুভ পরিনয় সম্পন্ন হল। গ্রামেরই কালী মন্দিরে সেই বিয়ে হল। ছ'মাস আগে আজকের দিনটি বিয়ের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল। ধুমধাম করে বিয়ের স্বপ্ন থাকে সকলেরই। জগন্নাথ ও মিনুর ইচ্ছে ছিল তেমনটাই। আয়োজনও চলছিল ভাবনার সঙ্গে তাল মিলিয়ে। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণে তাল কেটেছে করোনা। তাই ধুমধামে ইতি। বিয়ে পিছনো যেত। কিন্তু সে পথে না হেঁটে তাঁরা বিয়েটা সেড়ে নিলেন লক ডাউনের মধ্যেই। সেই বিয়ের সাক্ষী থাকলেন পুরোহিত-সহ দশ জন।
স্হানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তাপস চৌধুরী বললেন, অনেকে বিয়েটা পিছিয়ে দিতে বলছিলেন। কিন্তু কবে নাগাদ সব স্বাভাবিক হবে তার ঠিক নেই। তখন কে কেমন থাকবে জানা নেই কারোরই। তাই আর না পিছিয়ে আজই বিয়েটা হয়ে গেল। সোশ্যাল ডিসটেন্স বজায় রেখে, ছেলে ও মেয়ে সহ পরিবারের সদস্যরা যারা বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন তাদের মুখে মাস্ক পরিয়ে, স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুইয়ে দূরত্ব বজায় রেখে বিয়ে দিলাম। দোকান বাজার বন্ধ। তাই পাত্র পাত্রীর জন্য উপহার আনতে পারেননি প্রধান। তবে সকলের খাওয়া দাওয়ার জন্য চাল, ডাল, আলু, তেলের ব্যবস্থা করেন তিনি।
লক ডাউনে নানান অভিনব ঘটনা ঘটেই চলেছে। অনেকেই বিয়ে করছেন অনাড়ম্বর ভাবেই। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের এক হবু দম্পতি বিয়ে না পিছিয়ে প্রীতিভোজ বন্ধ করেছেন। বেঁচে যাওয়া টাকায় খাদ্য সামগ্রী কিনে দান করেছেন আটকে পরা পরিযায়ী শ্রমিকদের। তেমনই পশ্চিম বর্ধমানের এই দম্পতি মাস্ক পরে বিয়ে করে সচেতনতার নজির গড়লেন।