উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা থানার ঠাকুরনগরে রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম ফুলের বাজার । এই বাজারকে ঘিরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত প্রায় ৫০ হাজার পরিবার। ফুলের এই বাজার বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছেন সকলেই। বাজারের সঙ্গে জড়িত দিন মুজুর পরিবারগুলিতে দেখা দিচ্ছে খাদ্য সংকট।
লকডাউন শুরুর দিন থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ঠাকুরনগর ফুল বাজার। দ্বিতীয় পর্যায়ের লকডাউন শুরুর আগে ফুল বাজার খোলার কথা বলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এলাকাবাসীদের বিক্ষোভের জেরে খোলা যায়নি ফুল বাজার। স্থানীয় বাসিন্দাদের আতঙ্ক, ফুল বাজার খুললেই বহু লোক বিকিকিনির জন্য বাইরে থেকে ঠাকুর নগরে আসবেন। তাতে করোনার ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে । স্থানীয়দের এই সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন ফুল চাষিরা। গাঁদা, জবা, রজনীগন্ধা ও দোপাটি ফুল গাছে ফুটে গাছেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফুল চাষী পরিবারে দেখা দিচ্ছে অনটন।
অন্য দিকে ক্ষতি হচ্ছে ফুল গাছেরও। জবা ফুলের চাষি দেবল ঘোষ জানিয়েছেন, এই সময় গরম মরশুমের ফুল চাষ হয়। বেশিরভাগ ক্ষেতে ফুল ধরার সময় থেকে লকডাউন শুরু হয়েছে। একটি গাছ থেকে তিন মাসের মত ফুল পাওয়া যায়, যার এক মাস প্রায় কেটে যেতে চলেছে অথচ একটি টাকার মুখও তাঁরা দেখতে পাননি। গরম মরশুম শুরুর প্রথম দিকে ফুলের দামও বেশি থাকে। এই সময় একটু লাভের মুখ দেখেন তাঁরা। কিন্তু করোনার যেরে সারা দেশে লকডাউন চলছে। বন্ধ বাজার হাট। বন্ধ ফুল বাজারও। কেউ কেউ আবার গাছ বাঁচাতে নিজেরাই ফুল তুলে মাঠে-ঘাটে ফেলে দিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
ঠাকুর নগর ফুল বাজার কমিটির জয়েন্ট সেক্রেটারি পিনাকী বিশ্বাস জানান, তাঁদের এই বাজারে প্রতিদিন ৫০ লাখ টাকার কেনাবেচা হয়। কিন্তু বর্তমানে সবই বন্ধ। তাঁর মতে, বাজার বড় অল্প জায়গায়। ঘিঞ্জি বাজারে সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং মেনে বিকিকিনি অসম্ভব। ফুল চাষিদের করুন অবস্থা জেনেও বাজার বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। গাইঘাটার ফুল চাষি অজিত ঘোষের দাবি, ঠাকুর নগরে বেশ কয়েকটি মাঠ আছে, সেখানে প্রশাসন ফুলের বাজার বসালে লকডাউনের এই দুঃসময়ে কিছুটা সাহারা মিলত ।